কবি শামসুর রহমানের ৯৩ তম জন্মদিন আজ

ছবিঃ শামসুর রাহমান (সংগ্রহিত)

বিশ্বজিৎ দাস বিজয়,ঢাকা:

দেশের অন্যতম প্রধান কবি শামসুর রাহমানের ৯৩ তম জন্মদিন আজ। ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর বুধবার পুরান ঢাকার মাহুতটুলির ৪৬নম্বর বাড়িতে কবি জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেও আজীবন কবিতায় সমর্পিত এ কবি প্রধানতম কবি হয়েই বেঁচে আছেন বাঙালির সত্তায়। বাংলা কবিতায় তিনি নতুন ধারা সৃষ্টি করেছিলেন। উভয় বাংলায় সমকালীন সময়ে অন্যতম কবির মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হন তিনি।

তিনি একাধারে কবি, সাংবাদিক, গীতিকার ও কলামিস্ট। আজ কবির জন্মবার্ষিকীতে বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। 

ঢাকা নগরেই কেটেছে তার জীবনে বেশিরভাগ সময়।তাই নাগরিক দুঃখ-সুখ তাঁর কবিতায় বিশেষভাবে উঠে এসেছে। জীবনের সত্য-সুন্দরকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অনন্য। পাশাপাশি বাঙালির সব আন্দোলন-সংগ্রামের গৌরবদীপ্ত অধ্যায় ফিরে ফিরে এসেছে তাঁর কবিতায়।বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ওপর লিখিত তাঁর দুটি কবিতা খুবই জনপ্রিয়।তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৬০ সালে। প্রকাশিত গ্রন্থ শতাধিক। দৈনিক বাংলার সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন অনেক দিন। 

সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি আদমজী সাহিত্য পুরস্কার,বাংলা একাডেমি পুরস্কার,একুশে পদক,নাসির উদ্দিন স্বর্ণপদক,জীবনানন্দ পুরস্কার,আবুল মনসুর আহমেদ স্মৃতি পুরস্কার,স্বাধীনতা পদক,আনন্দ পুরস্কার লাভ করেন।এছাড়া ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে।

কবির লেখা গ্রন্থসমূহঃ

কাব্যগ্রন্থ: প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে, রৌদ্র করোটিতে,  বিধ্বস্ত নিলীমা, নিরালোকে দিব্যরথ, নিজ বাসভূমে,বন্দী শিবির থেকে, দুঃসময়ে মুখোমুখি, ফিরিয়ে নাও ঘাতক কাটা, আদিগন্ত নগ্ন পদধ্বনি, এক ধরনের অহংকার, আমি অনাহারী, শূন্যতায় তুমি শোকসভা, বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখে, ইকারুসের আকাশ, মাতাল ঋত্বিক, উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে ,কবিতার সঙ্গে গেরস্থালি নায়কের ছায়া,আমার কোন তাড়া নেই, যে অন্ধ সুন্দরী কাঁদে,অস্ত্রে আমার বিশ্বাস নেই,হোমারের স্বপ্নময় হাত, শিরোনাম মনে পড়ে না,ইচ্ছে হয় একটু দাঁড়াই,ধুলায় গড়ায় শিরস্ত্রাণ, এক ফোঁটা কেমন অনল,টেবিলে আপেলগুলো হেসে উঠে, দেশদ্রোহী হতে ইচ্ছে করে, অবিরল জলভ্রমি, আমরা ক'জন সঙ্গী, ঝর্ণা আমার আঙুলে, স্বপ্নেরা ডুকরে উঠে বারবার, খুব বেশি ভালো থাকতে নেই,মঞ্চের মাঝখানে, বুক তার বাংলাদেশের হৃদয়, হৃদয়ে আমার পৃথিবীর আলো,সে এক পরবাসে,গৃহযুদ্ধের আগে, খন্ডিত গৌরব, ধ্বংসের কিনারে বসে, হরিণের হাড়, আকাশ আসবে নেমে,উজাড় বাগানে, এসো কোকিল এসো স্বর্ণচাঁপা, মানব হৃদয়ে নৈবদ্য সাজাই, তুমিই নিঃশ্বাস তুমিই হৃৎস্পন্দন, তোমাকেই ডেকে ডেকে রক্তচক্ষু কোকিল হয়েছি, হেমন্ত সন্ধ্যায় কিছুকাল,ছায়াগণের সঙ্গে কিছুক্ষণ, মেঘলোকে মনোজ নিবাস, সৌন্দর্য আমার ঘরে, রূপের প্রবালে দগ্ধ সন্ধ্যা রাতে, টুকরা কিছু সংলাপের সাঁকো, স্বপ্নে ও দুঃস্বপ্নে বেচে আছি, নক্ষত্র বাজাতে বাজাতে, শুনি হৃদয়ের ধ্বনি, হৃদপদ্মে জ্যোৎস্না দোলে, ভগ্নস্তূপে গোলাপের হাসি, ভাঙাচোরা চাঁদ মুখ কালো করে ধুকছে, গন্তব্য নাই বা থাকুক, কৃষ্ণপক্ষে পূর্ণিমার দিকে,গোরস্থানে কোকিলের করুণ আহবান, অন্ধকার থেকে আলোয়, না বাস্তব না দুঃস্বপ্ন।

শিশু কিশোর সাহিত্য: এলাটিং বেলাটিং, ধান ভানলে কুঁরো দেব, গোলাপ ফোটে খুকীর হাতে, স্মৃতির শহর, রংধনুর সাঁকো, লাল ফুলকির ছড়া, নয়নার জন্য, আমের কুঁড়ি জামের কুঁড়ি, নয়নার জন্য গোলাপ।

উপন্যাস: অক্টোপাশ, অদ্ভুত আঁধার এক, নিয়ত মন্তাজ, এলো সে অবেলায়।

আত্মস্মৃতি: স্মৃতির শহর, কালের ধুলোয় লেখা।

অনুবাদ কবিতা: ফ্রস্টের কবিতা, রবার্ট ফ্রস্টের নির্বাচিত কবিতা, খাজা ফরিদের কবিতা।

অনুবাদ নাটক: হৃদয়ের ঋতু (মূল: টেনেসি উইলিয়মস), মার্কোমিলিয়ান্‌স্‌ (মূল: ইউজিন ও'নীল), হ্যামলেট (মূল: উইলিয়ম শেক্সপিয়র)।

প্রবন্ধ: আমৃত্যু তাঁর জীবনানন্দ, শামসুর রাহমানের প্রবন্ধ, কবিতা এক ধরনের আশ্রয়।

নিবন্ধ: কবে শেষ হবে কৃষ্ণপক্ষ

গল্প: শামসুর রাহমানের গল্প

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post