বুক রিভিউঃ ইলিন

বইয়ের নাম: ইলিন

লেখকের নাম: মোশতাক আহমেদ 

বইয়ের ধরণ: সায়েন্স ফিকশন

প্রকাশনী: অনিন্দ্য প্রকাশ 

প্রথম প্রকাশ: বইমেলা ২০২০

প্রচ্ছদ: মোঃ বাইজিদ আহমেদ

মূল্য: ২৫০


ফ্ল্যাপের কথা:

২২২০ সাল।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণাগারের প্রধান প্রফেসর রাইবাট। ব্যস্ততার কারণে তিনি এবং তার চিকিৎসক স্ত্রী মিলিনা সময় দিতে পারেন না একমাত্র সন্তান হ্যারিকে। তাই দশ বছরের হ্যারির জন্য একটি ক্লোন কিনেছেন তিনি,নাম ইলিন। ইলিনকে পেয়ে হ্যারি মহাখুশি। ইলিন তার জীবনে এনে দিয়েছে নতুন আনন্দ, জীবনকে করেছে প্রানবন্ত, উচ্ছল।হ্যারিকে আনন্দিত দেখে দারুণ খুশি প্রফেসর রাইবাট এবং তার স্ত্রী। কিন্তু তাদের দুজনের কেউই জানতেন না তাদের বিরুদ্ধে চলছে গোপন ষড়যন্ত্র। ষড়যন্ত্রের মূলে রয়েছেন তার সহকারী কমান্ডার বিক্স এবং পৃথিবীর অন্যতম ক্লোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লিওক্সের প্রধান লিটলি বাট। তাদের অনৈতিক দাবি পূরণ না-করার কারণে তারা হত্যা করেন প্রফেসর রাইবাট এবং তার স্ত্রীকে। দোষ চাপান নিষ্পাপ অসহায় আর সকলের প্রিয় ইলিনের ওপর। ইলিনকে ধরতে মরিয়া হয়ে ওঠে পুলিশ। এদিকে হ্যারি বাঁচানোর চেষ্টা করতে থাকে ইলিনকে।কিন্তু সবাই যে ইলিনের বিরুদ্ধে।

শেষ পর্যন্ত কি ঘটেছিল ইলিনের ভাগ্যে? আর হ্যারি কি পেরেছিে তার বাবা-মায়ের প্রকৃত হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে?


পাঠ প্রতিক্রিয়া :

পৃথিবীতে কোনদিন মানবক্লোন তৈরি হবে কিনা জানি না। তবে যদি লেখকের কথা সত্যিই কোনদিন ঘটে তাহলে সেটি হবে অন্যায়। আর প্রয়োজন শেষে সেই ক্লোনগুলোকে হত্যা করা হবে চরম অনমানবিক কাজ। কারন ক্লোনেরও প্রাণ আছে,আবেগ আছে, ভালোবাসা আছে। ইলিনকে ধন্যবাদ নিজের জীবন বিপন্ন করে সে  হ্যারিকে বাঁচিয়েছে। আর সবচেয়ে বেশি ধন্যবাদ মিটিকে। কারব তার ভালোবাসার তুলনা হয় না। আসলে মানুষ বেঈমানী করতে পারে কিন্তু পশু-পাখি নয়। ওরা ভালোবাসা বুঝে,ভালোবাসার মূল্য দিতে জানে।তার পরিচয় আমরা এই উপন্যাসেই পাই। হ্যারিরা বনে আশ্রয় নিলে বন্য প্রানীরা কিভাবে ওদের সাহায্য করে তা লেখক বেশ সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন।

লেখক উপন্যাসটিতে একটি সমস্যার কথা উল্লেখ্য করেছেন,২২২০ সালের বেশিরভাগ মা-বাবারা তাদের কর্মব্যস্তার কারনে তার সন্তানকে ঠিকমত সময় দিতে পারেন না।এর কারনে সন্তান একাকিত্বে ভোগে এবং ভুল পথে ধাবিত হয়। বর্তমানে এই ২০২০ সালেই এই সমস্যা ব্যাপকহারে দেখা দিয়েছে। তাই ভবিষ্যতে এই সমস্যা যে আরও বাড়বে এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। ছেলেমেয়েরাও ভুল পথে যাবে। তাই সন্তানকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। ওদের খেয়াল রাখতে হবে।

লেখক ক্লোন তৈরির ফলে যে ভয়াবহতা এবং অমানবিকতা তুলে ধরেছেন, তাই আমি কখনোই চাই না পৃথিবীতে কোনদিন মানব ক্লোন তৈরি হোক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post